Jin tarano

জ্বিন তাড়ানো

সুইটি বয়স ১৭ বছর মা সহ চেম্বারে এসেছে। কি মায়াবী চেহারা! মা বাবার একমাত্র সন্তান। কিছুদিন থেকে খুবই ঘুমের সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। মা- মেয়ের ঘুম হয় না। মেয়ে কে বাইরে বসতে বলে মাকে ঘটনা খুলে বলতে বললাম। মা যা বললো তা শুনে মাথা ঘোরানোর অবস্থা।

মেয়ের বাবার সাথে নতুন করে একজনের পরিচয় হয়েছে। মোটামুটি ব্যবসায়িক পরিচয় বলা যায়। কিছুদিন আগে এক কালো পাথর পান। লোকটি জানায় এই পাথর অনেক মূল্যবান। বিক্রি করলে কয়েক লক্ষ টাকা পাওয়া যাবে। তিনি পাথর বিক্রির বিনিময়ে দুই লক্ষ টাকা মেয়ের বাবার কাছ থেকে নিয়ে নেন। বন্ধুত্বের খাতিরে প্রতিদিন বাসায় যাওয়া আসা করেন। সবার সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। মেয়েটির মাঝে মাঝে মাথা ব্যথা হয়। এই কথা তিনি জানতে পেরেছেন। তিনি (পরিচিত ব্যবসায়ী) জানান মাথা ব্যথার চিকিৎসা তিনি জানেন। এই জন্য তাকে একাই এক সন্ধ্যায় আসন (জ্বীন তাড়ানোর ব্যবস্থা) দিতে হবে।

কথা মত একদিন সন্ধ্যায় পূর্ব নির্ধারিত জায়গার আসন বসে। ঘরের ভিতর ধোঁয়া দিয়ে ভরা, মাঝে আগুনের কুণ্ডলী। ঘরে প্রবেশ করতেই কি জানি একটা তার নাকের কাছে ধরা হয়। তারপর ধীরে ধীরে অচেতন হয়ে পরে। বাবা সাথে ছিল কিন্তু বাইরে রাখা হয় তাকে। ঘরে শুধু কবিরাজ আর সুইটি। কি হয় কিছুই বলতে পারে না। জ্ঞান ফিরে দেখে তার পায়জামার ফিতা খোলা, তলপেটে ব্যথা হচ্ছে। বাবার সাথে বাসায় ফিরে আসে। পূর্ণ জ্ঞান ফিরে আসার পর সুইটি বুঝতে পার তার সাথে খারাপ কিছু ঘটেছে।
মাকে পুরো ব্যাপার খুলে বলে। মা যা বোঝার তা বুঝে ফেলেছে। এই লোক তাদের কে বিশ্বাসের ফাঁদে ফেলে তার মেয়ের সর্বনাশ করে ফেলেছে। এই ঘটনার পর থেকে কবিরা সাহেব আর এই বাড়ি মুখি হন নাই। মা এখন চিন্তিত মেয়ের পিরিয়ড নিয়ে। যদি না হয় তাহলে কি হবে। এই চিন্তায় মা মেয়ের ঘুম হারাম।

Spread the love

1 thought on “জ্বিন তাড়ানো”

  1. ফারহানা জেসমিন জবা

    প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা গুলো এমন হাজারো সুইটির জীবন ধ্বংসের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। একজন সুইটি সামনে আসলেও বাকিদের নির্মম কাহিনি গুলো চাপা পড়ে যায় সমাজের নিন্দার ভয়ে।
    আমাদের উচিত সমাজের ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত বাস্তবতা গুলোকে লজ্জা না দিয়ে তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়ানো, নিন্দার বুলি ছড়িয়ে না দিয়ে সহযোগিতা র মনোভাব ছড়িয়ে দেওয়া।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *